সরকারের উদাসীনতার কারণে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (২ এপ্রিল) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একদিকে যখন কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ সারাবিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষকে বিপদগ্রস্ত করছে, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে অনির্বাচিত সরকারের উদাসীনতা, ব্যর্থতা, দুর্নীতির কারণে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক হারে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘করোনার শুরু থেকেই সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা ঘরে ঢুকে গেছেন। তারা ঘর থেকে বের হননি। কিন্তু সাধারণ জনগণকে তারা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন। ঘর থেকে বের হতে বাধ্য করেছেন। জোর করে সবাইকে কাজে পাঠিয়েছেন। সুতরাং ব্যাপকহারে সংক্রমণের জন্য সরকার দায়ী।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ চরম রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে পড়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরোধীদল আগ্রহী নয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চাল, ডাল, তেলসহ সকল পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী। অথচ কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল পাচ্ছে না। শ্রমিক ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। কোভিড-১৯ মোকাবিলার কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। এবারের করোনা আক্রমণ ইতোমধ্যে সেই সত্যকে জনগণের সমানে আতঙ্কের সঙ্গে তুলে ধরেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে এই বেআইনি সরকার বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমদের অভিন্ন নদী পানির হিস্যা, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা, ভারসাম্য বাণিজ্য থেকে বাংলাদেশ পুরোপুরি বঞ্চিত হচ্ছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই অবৈধ সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল আরও বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, আমাদের দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত অসংখ্য নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ কারণে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড আমরা স্থগিত করেছি। সুতরাং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ইস্যুতে এই মুহূর্তে কোনো কর্মসূচি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমরা সরকারকে অনুরোধ করব, অনতিবিলম্বে দ্রব্যমূল্য কমাতে।’